স্বদেশ ডেস্ক:
গাজীপুরের সদর উপজেলার বারিয়া ইউনিয়নের কেশরিতা গ্রামে লাক্সারি নামের একটি ফ্যান কারখানার সংঘটিত অগ্নিকান্ডে অন্তত ১০ শ্রমিক নিহত হয়েছে বলে জানা গেছে। রোববার সন্ধ্যা ৬টার কিছু আগে কারখানায় আগুন লাগে। ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিট প্রায় পৌণে দুই ঘণ্টা চেষ্টায় সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার পর ভেতর থেকে ১০ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়। কারখানাটি তিন তলা ভবনের। তিন তলার উপরে টিনের শেড রয়েছে। সেখানেই অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। গাজীপুর ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের উপ-সহকারী পরিচালক মো: মামুনুর রশিদ নিহতের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
নিহতদের মধ্যে চারজনের পরিচয় পাওয়া গেছে; তারা হলেন, রংপুরের কচুবকুল তলা গ্রামের ফরিদ (২০), গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার মার্তা গ্রামের রাশেদ ও শামীম ও স্থানীয় কেশোরিতা গ্রামের উত্তম।
দগ্ধ দুইজন হলেন, আয়োরার হোসেন (২০) ও হাসান (২১)। তাদের গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। হাসপাতালে আবাসিক মেডিকেল অফিসার প্রণয় ভূষণ দাশ জানান, দগ্ধ দুইজনের শরীরের ১০ শতাংশ পুড়ে গেছে। তাদের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
রাত ৮টার দিকে গাজীপুর জেলা প্রশাসক এস এম তরিকুল ইসলাম, পুলিশ সুপার সামছুন্নাহার, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান রিনা পারভীন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
সেখানে উদ্ধার কাজ চলছে। অগ্নিকান্ডের খবর ছড়িয়ে পড়লে কয়েক শত লোক ভিড় জমিয়েছেন।
জয়দেপুর ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার জাকারিয়া খান বলেন, বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে আগুন লাগলেও তারা সন্ধ্যা ৫টা ৫২ মিনিটে ওই কারখানার তিনতলা ভবনের তৃতীয় তলায় আগুন লাগার খবর পান। ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিট সন্ধ্যা ৬টা ৫০ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। সাড়ে ৭টার দিকে আগুন পুরোপুরি নিভে যায়।
জাকারিয়া খান সাংবাদিকদের জানান, তৃতীয় তলায় একটি কক্ষের দরজার কাছে আগুনের সূত্রপাত হলে শ্রমিকরা ভেতরের দিকে চলে যান। পরে আগুন নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে তারা ভেতরে আটকা পড়েন। আগুন নিয়ন্ত্রণের পর তৃতীয় তলার কক্ষ থেকে ১০ শ্রমিককের লাশ উদ্ধার করা হয়।
ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তা জাকারিয়া বলেন, আগুন লাগার কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি। কারখানায় কতজন শ্রমিক কাজ করছিলেন তাও কেউ বলতে পারেনি। কারখানার মালিকের নাম মো: জাহিদ বলে জানা গেলেও কর্তৃপক্ষের কাউকে ঘটনাস্থলে পাওয়া যায়নি। প্রাথমিক আলামত দেখে মনে হচ্ছে ১০ জনই ধোঁয়ায় শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মারা গেছেন।
তদন্ত কমিটি গঠন
আগুনের কারণ তদন্তে জেলা প্রশাসনের পক্ষথেকে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। গাজীপুরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট শাহীনুর ইসলাম জানান, তাকে প্রধান করে কমিটিতে একজন ফায়ার সার্ভিসের প্রতিনিধি, একজন পুলিশের প্রতিনিধি, একজন শিল্প পুলিশের প্রতিনিধি ও একজন কারখানার প্রতিনিধি রয়েছেন। তদন্ত কমিটিকে আগামী ১০ কার্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।